বিদেশিনি স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সাইকেলে ভারত থেকে সুইডেনে পাড়ি

0

Share this content:

Indian-artist বিদেশিনি স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সাইকেলে ভারত থেকে সুইডেনে পাড়ি

সুইডিস স্ত্রী শার্লটের সঙ্গে ভারতীয় শিল্পী প্রদ্যুম্ন

নিজস্ব প্রতিনিধি: সালটা ছিল ১৯৭৫। এদেশের শিল্পী প্রদ্যুম্ন মহানন্দিয়ার ছবি আঁকার কথা শুনে ইউরোপের সুইডেন থেকে  ভারতে উড়ে এসেছিলেন শার্লট ভন সেচভিন। প্রদ্যুম্ন দারুণ পোট্রেট আঁকে জেনে খুঁজে খুঁজে দেখা করেছিলেন প্রদ্যুম্নের সঙ্গে। তাঁকে দিয়ে পোট্রেট আঁকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শার্লট। সেসময় সবে নাম করতে শুরু করেছেন দিল্লির আর্ট কলেজের গরিব ছেলেটি। আর পোট্রেট আঁকার সময়ই প্রেমে পড়ে যান দুজন দুজনের। 

   শার্লটের সৌন্দর্যে প্রেমে পড়ে যাওয়ার কথাই। আর শার্লট শিল্পী প্রদুম্নের সহজ সরল জীবন যাপনে তাঁর  প্রেমে পড়ে যান। সেসময় দেশে ফেরার সময় হয়ে গিয়েছিল ওই সুইডিশ নারীর। ততদিনে দুজনে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। অনেকদিন আগে বিবিসির নেওয়া সাক্ষাৎকারের কথা জানিয়ে প্রদ্যুম্ন জানিয়েছেন তাঁর বাবার সঙ্গে প্রথমবার দেখা করার সময় শার্লট শাড়ি পরেছিলেন। এখনও প্রদ্যুম্ন জানেন না শার্লট কীভাবে শাড়ি পরা ম্যানেজ করেছিল।  পরিবারের সম্মতি নিয়ে আদিবাসী রীতি মেনে দুজনে বিয়ে করেও নেন। শার্লটের দেশে ফেরার সময় কাছাকাছি আসায় তাঁর সঙ্গে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু প্রদ্যুম্নের তখনও আর্ট কলেজের পড়া শেষ হয়নি। তবে কথা দেন পরীক্ষা শেষ হলে সুইডেনের বোরাসের টেক্সাসে তাঁর বাড়িতে যাবেন। যদিও দুজনের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলেছিল। এক বছর পর শার্লটের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করার সময়ই সমস্যা। সমস্যা বিমানভাড়ার টাকা জোগাড়ের।

বিমান ভাড়ার টাকা না থাকায় তাঁর যা ছিল, তা বিক্রি করে একটি বাই সাইকেল কিনে নেন তিনি। এরপরের চার মাস ধরে সেই বাইসাইকেল চালিয়ে প্রদ্যুম্ন প্রথমে পাকিস্তান, তারপর আফগানিস্তান, ইরান ও তুরস্ক পেরোন। (The Indian Artist And Swedish Wife)   মাঝপথে বহুবার তাঁর বাই সাইকেল ভেঙে যায়। এমনকী দিনের পর দিন রাস্তায় খাওয়াও জোটেনি তাঁর। কিন্তু তাতেও শিল্পীর অদম্য ইচ্ছে অটুট ছিল।
   ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বাইসাইকেল যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে সত্তর কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে যেতেন। তবে তাঁকে বাঁচিয়েছিল ছবি আঁকা। অনেকের পোট্রেট এঁকে টাকাও পান তিনি। কেউ কেউ খাবার ও রাতে থাকার আশ্রয় দেন। শেষ পর্যন্ত আঠাশে মে ইস্তানবুল ও ভিয়েনা হয়ে সুইডেনে পৌঁছন। সেখানে ট্রেনে করে গোথেল বার্গে পৌঁছন। দেখা হয় বিবাহিতা স্ত্রী শার্লটের সঙ্গে। সুইডেনে দু জনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। প্রদ্যুম্ন জানিয়েছেন তিনি ইউরোপিয় সংস্কৃতির কিছুই জানতেন না। শার্লটই হাতে ধরে তাঁকে প্রতিটি জিনিস ধাপে ধাপে শেখান। ও একটা অন্যরকম মহিলা, বিবিসিকে জানিয়েছেন প্রদ্যুম্ন । তাঁকে এখনও সেই প্রথমদিনের মতো আজও ভালোবাসি। এই মুহূর্তে সুইডেনে দুই সন্তানকে নিয়ে শার্লটের সঙ্গে থাকেন এই শিল্পী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *