নেতাজির উত্তরাধিকার শোষণ করছে আরএসএস, সরব নেতাজি-কন্যা
Share this content:

নিজস্ব প্রতিনিধি : এক বছর আগে কলকাতায় ঘটা করে নেতাজির জন্মদিন পালনের আগেই আরএসএসের উদ্যোগের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন নেতাজি কন্যা অনীতা বসু পাফ। নেতাজি কন্যা আরএসএসের এই উদ্যোগকে দেশনায়কের উত্তরাধিকারকে আংশিকভাবে শোষণের চেষ্টা বলে বর্ণনা করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংহতি নিয়ে দেশনায়কের আদর্শের সঙ্গে সঙ্ঘ পরিবারের আদর্শ দুই মেরুতে অবস্থান করছে।
আদর্শের প্রশ্নে অন্য দলগুলির তুলনায় কংগ্রেসের সঙ্গে নেতাজির আদর্শের মিল রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন নেতাজি কন্যা। গত বছর কলকাতায় আরএসএস প্রধান নেতাজিকে নিয়ে ভাষণ দেওয়ার আগেই জার্মান থেকে ফোনে সঙ্ঘপরিবারের এই উদ্যোগের সমালোচনায় মুখর হন নেতাজি কন্যা। অনীতার কথায়, নেতাজি যে সমস্ত ধর্মকে সমান শ্রদ্ধা জানানোর বার্তা দিয়েছিলেন, বিজেপি-আরএসএসের মধ্যে তা কোনওভাবেই প্রতিফলিত হতে দেখা যায় না। নেতাজি হিন্দু হলেও তিনি অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করায় বিশ্বাস করতেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মের সহযোগিতায় আস্থা রেখেছিলেন।
জার্মান থেকে ফোনে নেতাজি কন্যা সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছিলেন বিজেপি এবং আরএসএসের মধ্যে কোনওভাবেই তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরার চেষ্টা হয়নি। যদি কোনও তকমা দেওয়া যায়, তাহলে বলতে হবে বিজেপি-আরএসএস দক্ষিণপন্থী, কিন্তু নেতাজি একজন বামপন্থী ছিলেন। অনীতা জানিয়েছিলেন তিনি যতটুকু আরএসএসের আদর্শের কথা জানেন তার সঙ্গে নেতাজির আদর্শের সঙ্গে কোনও মিল নেই। দুপক্ষের মূল্যবোধও আলাদা। তবে আরএসএস যদি নেতাজির আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে চায়,তাহলে সেটা ভালো জিনিস হবে। বহু গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে নেতাজির জন্মদিন পালন করতে চায় এবং তাদের সদস্যকে যে দেশনায়কের আদর্শকে মানতে হবে, তার প্রয়োজন নেই।
নেতাজি আরএসএসের সমালোচক ছিলেন কিনা, সংবাদ সংস্থার প্রশ্নের উত্তরে অনীতা বসু পাফ জানিয়েছিলেন, নেতাজির এমন কোনও কথা তাঁর জানা নেই। তবে আরএসএসের সদস্যদের সমালোচনা করে তিনি বিবৃতি দিয়ে থাকতে পারেন। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে সঙ্ঘপরিবার ও নেতাজির দৃষ্টিভঙ্গির কোনও মিল নেই। যদিও নেতাজির জন্মদিন ঘটা করে পালনের ব্যাপারে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশংসা করেছিলেন অনীতা। অন্যদিকে কংগ্রেসের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি তিনি। তাঁর কথায় নেতাজি নিয়ে কংগ্রেসের প্রকৃত অবস্থান কংগ্রেসকর্মীদের সেভাবে জানানো হয়নি। তারা জানাতে চেয়েছিল আইন অমান্য আন্দোলনের জন্যই ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল। কিন্তু নেতাজিকে নিয়ে গোপন ফাইল খোলার পর জানা গিয়েছে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।