বাংলাদেশের রাশ কি জামাতে ইসলামের হাতে থাকবে?

0

Share this content:

Jamate-1024x683 বাংলাদেশের রাশ কি জামাতে ইসলামের হাতে থাকবে?

নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশের রাশ কোনও গণতান্ত্রিক দলের হাতে নয়। রাশ থাকুক মৌলবাদীদের হাতে। সেদেশকে পাকিস্তানের মতো ইসলামি রাষ্ট্র করা হোক। দেশে চালু হোক শরিয়ত আইন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হিংসার পেছনে বারবার আঙুল উঠতে শুরু করেছে কট্টরপন্থীদের দিকে। আর এই কট্টরপন্থীদের পেছনে যে সংগঠন রয়েছে,সেই সংগঠনের নাম জামাত-এ-ইসলামি। প্রথমে সংগঠনটির নাম ছিল জামাত-ই-ইসলামি বাংলাদেশ। এটি সেদেশের বৃহত্তম ইসলামি রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। এই মুহূর্তে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কান্তি দাসের গ্রেফতারের ঘটনায় হিংসার আগুনে রীতিমতো জ্বলছে প্রতিবেশি রাষ্ট্র। সংখ্যালঘু হিন্দু, অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে জামাত। তাদের লোকজনেরা হিন্দুদের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ,মন্দিরগুলিতে প্রতিদিনই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। আর এই কাজে তাদের দোসর খালেদা জিয়ার বিএনপি। এই দুই সংগঠনই চায় বাংলাদেশকে হিন্দু-তথা সংখ্যালঘু শূন্য করতে। এ জন্য রোজই তাদের ওপর চালানো হচ্ছে সন্ত্রাস, হামলা।

 এই সংগঠন একেবারে প্রথম থেকেই চায়নি পূর্ব পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশের সৃষ্টি। শেখ মুজিবর রহমানের গড়া বাংলাদেশের সৃষ্টির পর থেকেই জামাত সেদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈরিতার রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেছিল। কারণ এদের টিকি বাধা রয়েছে পাকিস্তানে। সেখানকার মৌলবাদীদের মদতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে সক্রিয় ছিল তারা। আর এখন বাংলাদেশে তারা হিন্দুদের প্রতি নির্বিচার সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ তারা বাংলাদেশকে ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত করতে উঠেপড়ে লাগতে শুরু করেছে।

 সালটা ছিল ১৯৪১। সেবছর কট্টরপন্থী আবুল আলা মাউদুদি পাকিস্তানের লাহোরে এই সংগঠন তৈরি করেন। এদের পূর্বসূরি পাকিস্তানের জামাত-এ-ইসলামি পাকিস্তান তীব্র ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। চায়নি পাকিস্তান দু টুকরো হোক। ১৯৭১ সালে পাক সেনার সহযোগিতায় বাংলাদেশে বাঙালি নাগরিক ও বুদ্ধিজীবীদের নির্বিচারে খুন করেছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের নিষিদ্ধ করে সেদেশের মুজিব সরকার।সেইসঙ্গে সমস্ত ধর্মীয় সংগঠনগুলিকও নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৭৫ সালে সেদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হত্যা ও সামরিক অভ্যুত্থানের পর জামাতের ওপর থেকে তুলে নেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জামাতে রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেন। নতুন করে তৈরি হয় জামাত-এ- ইসলামি।    

দেশ থেকে নির্বাসিত জামাতে নেতাদের দেশে ফেরানো হয়। সেসময় এই সংগঠনের কার্যকরী আমির হন আব্বাস আলি খান। ১৯৮০ সালে দেশে তথাকথিত গণতন্ত্র ফেরাতে বহুদলীয় জোটে যোগ দেয়। হাত মেলায় বিএনপির সঙ্গে এবং তাদের সরকারে দুবার মন্ত্রী হন জামাতের নেতারা। ১৯৯৬ সালে সরকার গড়তে আওয়ামি লিগের সঙ্গেও যোগ দেয় তারা। ২০১৩ সালে আওয়ামি লিগের শাসনে বিএনপির দুই নেতা ও জামাতের আটজন নেতার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়। সেবছর মার্চে তিন জামাতে নেতাকে সাজা দেয় আদালত। ওই বছর পয়লা আগস্ট সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট জামাত-এ-ইসলামির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেয়। এবং জানায় তারা সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার উপযুক্ত নয়। এ বছরের পয়লা আগস্ট তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শেখ হাসিনার সরকার। তবে হাসিনার পতনের পর মহম্মদ ইউনূসের সরকার জামাতেকে নিষিদ্ধ করার নির্দেশ বাতিল করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *